প্রাচ্যের ম্যানচেষ্টার খ্যাত ঐতিহ্যবাহী শেখেরচর (বাবুরহাট)
শহর থেকে ১২ কিলোমিটার দক্ষিণে নরসিংদী সদর থানার শেখেরচরে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী হাটের পুরো নাম শেখেরচর বাবুরহাট। বাবুরহাট বাংলাদেশের প্রসিদ্ধ কাপড়ের বাজার। প্রসিদ্ধ মানে যে-সে প্রসিদ্ধ নয়, যারা কাপড়ের ব্যবসা করেন তারা জানেন। বাংলাদেশে পাওয়া যায় এমন প্রায় সব ধরনের কাপড়ই বাবুরহাটে পাওয়া যায়। এ হাটের ইতিহাস হলো জমিদার আশুবাবু তিরিশের দশকে নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার মাধবদীতে একটি কাপড়ের বাজার প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু কোনো কারণে তার ভাই কালিবাবুর সঙ্গে ঝগড়া হলে কালিবাবু, প্রথমবাবু ও গোপালবাবু শেখেরচরে এ বাবুরহাট প্রতিষ্ঠা করেন। অল্প সময়েই নতুন বাবুরহাট পাইকারি বড়বাজার হিসেবে দাঁড়িয়ে যায় এবং সেই থেকে এটি বাবুরহাট নামে প্রসিদ্ধ হয়। এ অঞ্চল বহুকাল থেকে তাঁতবস্ত্রের জন্য প্রসিদ্ধ। এক সময় এ অঞ্চলে মসলিন কাপড় তৈরি হতো। তৈরি হতো মসলিনের উপযুক্ত সুতা কিন্তু ইংরেজ আগমনের পর এ দেশে সুতা তৈরি প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। তাঁতিরা কলে তৈরি সুতার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। ইংরেজ আমলে বিলেত ও বোম্বে থেকে সুতা আমদানি হয়ে প্রথমে নারায়ণগঞ্জ ও পরে বাবুরহাটে আসত।
বর্তমানে এ হাটে ১০ হাজারেরও অধিক দোকান আছে। এখানে এক সময় কেবল রবিবারেই হাট বসত। এখন সপ্তাহে তিনদিন শুত্রু, শনি ও রবিবার হাট বসে। অন্যান্য দিন বাজার খোলা থাকে। প্রতি হাটবারে ১০০ কোটিরও বেশি টাকার বেচাকেনা হয়। বাংলাদেশের সকল জেলায় এখান থেকে কাপড় যায়। চাইলে আপনিও আসতে পারেন এই বাবুরহাটে। কিনতে পারেন গামছা। তবে কমপক্ষে একডজন কিনতে হবে।
No comments